খুব ক্ষুদ্রকাল হইতেই ট্যাকা সম্পর্কে একটা ফাঁকা ধারণা গজাইয়াছিল। যে বয়সে লোকেরা ট্যাকার জন্য ব্যাঁকা হইয়া হামাগুড়ি দেয়, সেই বয়সে ব্যাপক নির্লিপ্ততা সহকারে একা একা কতই যে ঘুরিয়া বেড়াইয়া মরিয়াছি তাহার ইয়ত্তা নাই। কারণ মনের কোণে খুব ভালো করিয়াই জানিতাম, উহা আয়ত্ত সুমায়ের ব্যাফার মাত্র। সঠিক সুমায়ে প্রচুর টঙ্কাদি আপনি উড়িয়া আসিয়া পকট ভরিয়া ফেলিবে ইহাতে আর অন্যথা কি? মস্তিষ্ক যেহেতু ভালো আর চেহারা সুরতও অসুবিধার না, তখন ট্যাকা না আসিয়া পাহ..হারেই না।
ভালো বউ, উত্তম শ্বশুর, অতিউত্তম শ্বশুরালয়, নিজের বিরাট বাড়িড্যা, গাড়িড্যা, খালি সাইনেচার খ্যাচার অতি বড় চাকরিড্যা, সঙ্গে চাকর নফর, দাসী বান্দি স্ত্রী উপস্ত্রী পরস্ত্রী, সবকেই সুমায়ের পিতাতো সম্পত্তি মনে করিতাম। ফলে ট্যাকা লইয়া অধিক চিন্তা বাদ দিয়া চিন্তাকে হাতের ডাইনে সরাইয়া রাখিলাম।
অথচ সেই ক্ষুদ্রকালেই পছা দারোগার পুলা দেড়ব্যাটারি রাসেল সাদা কাগজে বাজারে নতুন আসা দুই ট্যাকার নোট যথাসুম্ভাব সঠিক করিয়া আঁকিয়া চানাচুরআলার কাছে চানাচুর কিনিতে যাইয়া ধরা খাইয়া গেল। এই নিয়া পাড়ার মাসিপিসিরা কত হাসাহাসি, ঠাসাঠাসি, দেখিয়া যারপরনাই বিরক্ত হইতাম। ভাবিতাম ইহাদের বুঝি কুনো কর্মাদি নাই, কী ধুনের বিষয় লইয়া সারা বিকাল অযথা গুজুলগুজুল ফুসুলফাসুল! শুধু কি তাই? কার পুলায় কত কামাইল, কার পুলায় এক ট্যাকাও কামায় না, কার পুলায় মাওরে ভাত দেয়, কার পুলায় দেয় না, কার পুলায় বউ গুতায়, কার পুলায় মাও, কার পুলা জুপানে গেল, কার পুলা মারিকা এইসব আরকি।
ফলে এইসব ধুনফুন অগ্রাহ্য করিয়া বড় বড় চিন্তায় মাথা গলাইয়া দিলাম। সুরুচির চিন্তা বিনে কুরুচির চিন্তাগুনিরে হটহট করিয়া হটাইয়া দিয়া গটগট করিয়া হাঁটিয়া যাইতাম অন্যত্র। পাশের বাড়ির বাজে চেহারার মেয়েগুনির দিকে একবারের তরেও ফিরিয়া তাকাইতাম না। তাহার পরও এক বর্ষণমুখর দুপুরের অব্যবহিত পরেই একটা গন্ধরাজ ফুল জানালা দ্বারা উড়িয়া আসিয়া বিছানায় গড়াইয়া পড়িল। ইহা দেখিয়া মনটা বাস্তবিকই ঘিরিনায় পচিয়া গেল।
ভিতর ভিতর এই ভাবিয়াও শঙ্কিত হইয়া পড়িলাম, যদি এইসব বাজে চেহারার মেয়েগুনি দুর্দৈবক্রমে আমাকে ভালবাসিয়া ফালায় তাহা হইলে আর রক্ষা নাই, অকালে অক্কা পাওয়া বিনে। ফলে মুখচোখ আরও শক্ত করিয়া হাঁটিয়া চলিয়া বেড়াইতে লাগিলাম মস্তিষ্কে বড় বড় ভাবনা যুক্ত করিয়া। যাহাতে উহারা আর এইভাবে ফুল ছুঁড়িয়া মারার সামোস সঞ্চয় না করিতে পারে। শুধু তাহাই নয়, ক্ষুদ্র ভগ্নিটিকে উত্তম ভাষায় গালিগালাজ বর্ষাইলাম, উহাদের আড়চোখে শুনাইয়া শুনাইয়া, কেন সে এত বাজে চেহারার মেয়েগুনির নগে মিশে? কেন সে অনেক ভালো চেহারার মেয়েগুনির নগে মিশে না? কেন এইসব বাজে চেহারার মেয়েগুনি সামোস পায় জানালা দ্বারা ফুল ছুড়িয়া মারার? বলিয়া উহাদের ভাব ভালবাসার বিচকুলি মাড়িয়া দিলাম অচিরাৎ। তারপর আনন্দদায়ক উত্তেজনা নিয়া বাটির বাহিরে যাইয়া আষ্টআনার চানাচুর কিনিয়া খাইলাম মজা ভরিয়া।
ইহার পর থিক্যা উহারা আর আমা পানে তাকায় না। আমিও আর উহাদের...তাকানোর প্রশ্নই উঠে না। ইহার মাস কয় পর ট্যালেনফুলে বিত্তি লইয়া ভর্তিক হইলাম বিন্দুবাসিনী হাইস্কুলে। ইংলিশ প্যান্ট ছাড়িয়া ফুল প্যান্ট ধরিলাম। পক্কুর গুরে সোনালী ভাইত্যা পশম ঝরিয়া পড়িয়া কালা রং ধারণ করিতে নাগিল। শুধু তাহাই নয়, একদিন বৈকাল বেলা ফুটবল খেলিতে নাগিছিলাম। হঠাশ বল আসিয়া গুম্মুত করিয়া বুকে আঘাত হানিল।
যদিও এইসব ছোটখাটো ব্যাদ্নায় কাতর হইবার লোক নহি আমি, কিন্তু তাহার পরও ব্যাদ্নার রকমটা এট্টু অজানা প্রকৃতির হওয়ায় শার্ট খুলিয়া ব্যাদ্না স্থান দেখিতে গেলাম। কিন্তু ওমা! ইহা কি। ব্যাদ্না স্থান দেখিতে যাইয়া দেখিলাম বুকে ছোট ছোট দুইটা বরই বীচির ন্যায় গোটা ফুটিয়াছে! যাহা পাশের বাড়ির বাজে চেহারার মেয়েগুনির ফুটিয়াছিল মাস কয় আগে। দেখিতে এতই বিশ্রী নাগিত যে তাহা আর কহতব্য নয়। সেই বিশ্রী বীচির ক্ষুদ্র সংস্করণ নিজের বুকে দেখিবামাত্র মাথা ভন করিয়া ঘুরিয়া গেলগা। শঙ্কায় মরিয়া যাইলাম। এই বুঝি বুকের ন্যায় নাইয়ের এক বিগ্গা নীচেও পুংলিঙ্গ ঝরিয়া পড়িয়া স্ত্রী লিঙ্গ গজায়!
কিন্তু আমারে বল থুইয়া বুক ধরিয়া ভুদাই সাজিয়া খাড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া সহ-খেলোয়াড়দের বুঝি বোধোদয় হইল, সামথিম রম!! তাহারা রারা করিয়া তাড়াইয়া আসিল। বলিল, হুইয়া পড় হুইয়া পড়। আরেকজন নাক টিপিয়া ধরিয়া বলিতে লাগিল, মুখ দিয়া নিয়াশ ছাড়... মুখ দিয়া...। আমি তাহাদের সর সর বলিয়া এবং তৎসঙ্গে হাত পা চালাইয়া সরাইয়া দিতে পারিলাম। এবং বলিলাম আমার কিচ্চু হয় নাই। আমার এমত অস্বাভাবিক আচরণে তাহারা যারপরনাই অ্যাবাক। কিন্তু তাহাদের অ্যাবাক ভাব বেশিক্ষণ টিকিল না। তাহারা আমারে ছাড়িয়া দিয়া পুনরায় খেলায় ব্যাপৃত হইয়া পড়িল।
আমি খেলা ছাড়িয়া মাঠের পাশে বসিয়া উথাল পাথাল ভাবিতে লাগিলাম, হায় হায়... এখন আমার কী হইবে? আমি কি তবে সত্যি সত্যিই..আর ভাবিতে পারিলাম না। কিয়ৎক্ষণ থুম মারিয়া বসিয়া রহিলাম। কী করিব কোথায় যাইব...ভাবিতে পারিতেছিলাম না কিচ্ছু। হঠাশ মাথায় চিন্তা উদয় হইল, আইচ্ছা আমি কি কুনো পাপ করিয়াছি? যাহার জন্য আমার এই শাস্তি? খুঁজিয়া পাতিয়া দেখিলাম এমন কুনো বড় মার্জিনের পাপ আমা দ্বারা সম্পন্ন হয় নাই, যাহাতে করিয়া ছেরা হইতে ছেরীতে রূপান্তরিত হইবার মতো বড় মাপের শাস্তি জোটে কুয়ালে। তাহা হইলে কি কারও অভিশাপ?
এইবার টন্নশ করিয়া মাথা খুলিয়া গেল। এবং অচিরাৎ মনের কোণে ফুটিয়া উঠিল বাজে চেহারার মেয়েগুনির মুখাবয়ব। মিজাজটা এতটাই খিচরিয়া গেল যে মনে হইল ওই মুহূর্তেই তাড়িয়া গিয়া উহাদের মারিয়া আসি, উহাদের আম্মা আব্বার সামনেই।
কিন্তু খিচরিয়াভাব এট্টু কমিয়া যাইতেই টের পাইলাম, তাহাতে কোনও লভ্যাংশ নাই। বরং পচুর ক্ষতির তলে পড়িয়া সারা জীবনের তরে ছেরী হইয়া যাইবার সম্ভাবনাটা আরও ত্বরিৎগতি প্রাপ্ত হয়। তাই মাথা হইতে পরামর্শ আইল, বরং তুমি উহাদের কাছে মাপ মুক্তি চাহিয়া লও...অভিশাপ কাটিয়া যাইলেও যাইতে পারে।
কক্ষনো না..মইরা গেলেও না। ফাঁসি দ্বারা মরিয়া যাইমু তাহার পরও ওইসব নাং করানির মেহ্হেদের নিকট মাথা নোয়াইতে পারহিমু না। কিন্তু মস্তিষ্ক ঘন ঘন ঘুরাইয়া ফিরাইয়া বাজে চেহারার মেয়েগুনির ফটোক দেখাইয়া ভীষণ বিরক্ত করিতে নাগিল। কে যানি ভিতর হইতে কহিতে লাগিল, যাও যাও আর সুমায় নাই...হয়তো আইজক্যা রাইতেই...।
ডরাইয়া গেলামগা। কী করি? কোথায়ই বা যাই? বাঁচিয়া থাকিব না অকালেই মরিয়া যাইব, ভাবিয়া কিনারা করিতে পারিলাম না সহসা। এই যখন অবস্থা তখন আমারই গরম মাথা উত্তর করিল, মরিয়া যাওয়াই ভালো। এই অসম্মান লইয়া সোমসারে বাঁচিয়া থাকিবার কী হেতু? কিন্তু ঠাণ্ডা মাথা পিন পিন করিয়া বলিল, কেন মরিবে খামোখা। এট্টু মান ঘিন ত্যাগ করিয়া ক্ষমা চাইলেই তো অসম্মান কাটিয়া যায়।
গরম মাথা কহিল, না না না না। তাহা হয় না। ওইসব মেহহেদের কাছে ক্ষমা চাওয়া যায় না।
ঠাণ্ডা মাথা গরম হইয়া কহিল, তবে আর কি? মরো...গোভাগারে গিয়া... নুমাজ পড়িস খানকিট পুলা?
গরম মাথা চূড়ান্ত অভিমানী হইয়া কহিল, মরিবই তো। কাইলক্যা শুক্কুর বার জুম্বার নুমাজ পড়িয়াই মরিয়া যাইব।
ঠাণ্ডা মাথা তখন মিটিমিটি হাসিয়া কহিল, মরিয়া যাইলেই কি অসম্মানের তল হইতে রেহাই পাইবা ভাবিছ?
কেন পাইব না বলিয়া গরম মাথা উল্টাভি প্রশ্ন হাঁকিয়া বসিল।
কিন্তু তাহাতে এট্টুও না ভচকাইয়া ইলবিল টাইপের হাসি হাসিয়া বলিল, মরার পর কী হইবে, জানো?
গরম মাথা কহিল, মরার পর আবার কী হইবে? মরার পর মরিয়া যাইবে। জবান বন্ধ হইবে, চোখে কিছু দেখিতে পাইমু না.....খালি আন্ধার......ঘুটঘুইটা আন্দার।
ঠাণ্ডা মাথা কিটি কিটি হাসে আর কয়, তাহাতো হইবেই। কিন্তু যখন লোকেরা তোমাকে গোসল ধোয়াইবে তখন যুদি তাহারা তোমার ক্ষুদ্র পক্কু ছোট্ট ভুতুমে পরিণত হইয়াছে দেখিয়া ফেলে তখন কী হইবে?
হা হা করিয়া ওঠে গরম মাথা। তাহাইতো তাহাইতো?
উহাদের বাহাস সমাপ্তে এইক্ষণে আমি কাঁদিয়া কাটিয়া কহিয়া ফেলি, দূরে যাইয়া মরিয়া যাইব... যাহাতে কেহই আর না চিনিতে পারে। আর তখনই ঠুয়া দ্বারা আমার থুমভাব ভাঙ্গিয়া দিল দেড়ব্যাটারি রাসেল।
কীরে? এত কী ভাবোস? রাসেলকে পাইয়া হাতে একটা চাঁদ পাইলাম যেন! যদিও শ্যালকপুত্রকে অন্য সুমায় পাইলে অন্যরকম সিন হইত বৈকি। কিন্তু তখন উহাকে দরদী ভাই বিনে অন্য কিছুই মনে করিতে পারিলাম না। সপ্তম পঞ্চম না ভাবিয়া এবং লাজ নজ্জার মাথা ও পিছা খাইয়া উহাকে বলিয়াই ফেলিলাম, ঘটনা হইল এই। শুনিয়া রাসেল অন্যদিকে (যদিও আমার দিকেই সে তাকিয়ে আছে) তাকাইয়া হাসিয়া হাসিয়া কহিল, আমারও হইছিল। বীছি গালিয়া দিছি। ঠিক হইয়া গেছে গা। একটু থামিয়া আরও কহিল, এইন্না ছেরী মাইনষ্যেরও অয়। আবর ছ্যারা মাইনষেরও অয়। ছেরি মাইনষ্যেরডা গালান নাগে না....... ছেরা মাইনষ্যেরডা গালান নাগে।
এই বলিয়া সে শাট খুলিয়া বুকের উপরে গজানো বরই বীচিডার দুই ধারে আঙ্গুল সেট করিয়া কিছু বুঝিবা মাত্র চিপ দিয়া দিল। উরে বাবারে বলিয়া চিকির দিয়া উঠিলাম। তৎসঙ্গে হাতপা চালাইলাম আন্দাকুন্দা। তাহার খানদুয়েক রাসেলের পিঠে পোদে পড়ায় রাসেল আমার বরই বীচি ছাড়িয়া দিয়া পলাইয়া বাঁচিল।
খেলা ভুলিয়া ওরা আবারও দৌড়িয়া আইল। কহিল, কী অইছে? কী অইছে? লজ্জায় কিছুই কহিতে পারি না। কিন্তু প্রশ্নকারীরাও থামে না। তাই একপ্রকার কহিতে বাধ্য হইলাম, কিছুই হয় নাই। প্রশ্নকারীরা উল্টা প্রশ্ন করিল, তাইলে চিক্যার দিলি ক্যা? মুশকিলে পড়িলাম। কী বলি? বেকায়দায় পড়িয়া মেজাজ ধরিয়া রাখিয়া খাইতে পারিলাম না। রাগতস্বরে প্রশ্নকারীরে কহিলাম, ইচ্ছা হইছে চিকির দিছি। তর বাপের কী? আমার উত্তর শুনিয়া প্রশ্নকারী ভয় পাইয়া গেল, অন্যরা ‘শালায় পাগল হইছে’ বলিয়া আমাকে উপহাস মারিয়া আবারও খেলিতে চলিয়া গেল।
ওরা চলিয়া গেলে আমি কান্না ভুলিয়া ভয়ে ভয়ে সন্তর্পণে আবারও শার্ট খুলিয়া নতুন পরিস্থিতি দেখিতে গেলাম। দেখিলাম রাসেল চুদিনির ছেলে খুব বেশি অনিষ্ট করিতে পারে নাই। ইকটু লাল দাগ হইয়াছে বটে, কিন্তু বীচি গালাইতে পারে নাই। এই যখন ভাবিতেছি তখন বকুল তলা হইতে ইভান ভাই ডাকিল। কহিল, কী সাত পাঁচ ভাবিতেছ?
ইভান ভাইয়ের চেহারা ভালো, ফলে সে মানুষও ভালো হইবে এতে আর অন্যথা কি? তাই তাহাকে বলা যায় ভাবিয়া কহিলাম, এই এই ঘটনা। শুনিয়া ইভান ভাই কহিল, সাবধান! আর হাত দিও না কিন্তু। বেশি হাইতালে উহা মেয়েদের ন্যায় ফুলিয়া উঠিবে। আর না হাইতালে উহা কিয়ৎকাল পর আমসি মারিয়া পূর্বাবস্থায় ফিরিয়া যাইবে।
ইভান ভাইকে অনবিশ্বাস করার উফায় নাই। কারণ একে তো চেহারা ভালো তাহার পর আবার সাইন্সের ছাত্র। কিন্তু কিছুতেই না কহিয়া পারিলাম না, তাইলে রাসেল যে কইল বীচি গালিয়া দিয়ান লাগব? ইভান ভাই হাসিয়া কহিল, উ তো একটা শারামজাদা। উহার কথা বিশ্বাস করিও না।
ইহার পর মাস কয় কাটিয়া গেল বিরাট ভয়ে। প্রায় প্রতিদিনই শার্ট সরাইয়া বরই বীচির গতিপ্রকৃতি দেখি। শেষমেশ দেখা গেল, ইভান ভাইর কথাই ঠিক। বিরাট এক ফাড়া কাটিয়া যাওয়ার আনন্দে আত্মহারা হইয়া গেলামগা গো। তাহার পর এইবার আমারে কে পায় এই দর্শনকে সঙ্গী করিয়া এহাবারে বাঁধনহারা গিয়ানজামে নিজেকে নিয়োগ করিলাম।
পাড়ার নিরীহ পুলাপানদিগকে হুছালা(ইংরাজি হোলসেল থেকে হুছালা, মানে পাইকারি) বানাইতে লাগিলাম। যাহাদেরকে বানাইলাম উহাদেরকে লইয়াই আবার দল গড়িয়া আশপাশের এলাকা আক্রমণে বাহির হইলাম। ব্যাপক সাফল্য কুড়াইলাম। সেই সাথে পাহাড়প্রমাণ নালিশ আসিয়াও জমা হইল বাটিতে।
তো, একদিন মাতা আপিস হইতে ফিরিয়া কহিল, বাবা ন্যাঠা, তুমি ক্যাঢেট কলেজে ভর্তিক হইবার লাগি প্রস্তুতি ল্যাও। শহীদ ষাঁঢ়ের নগে কথা বলিয়া আসিয়াছি, তুমি আগামী হপ্তা হইতেই উঁহার ক্যাঢেট কোচিঙ্গের দুহানে যাওয়া আহা শুরু করিয়া দ্যাও। শুনিয়া যারপরনাই আমোদিত হইলাম। ক্যাঢেট কলেজে পড়িব, আমরি আফসার বনিব, ভারত দখল করিয়া লইব এইগুলিন তো গুদাবেলাকার স্বপ্ন। তাই আর না করিতে পারিলাম না। বলিলাম, ঠিকাছে যাইবক্ষণ।
যাওয়া আহা শুরু হইল শহীদের দুহানে। যাহা পড়ায়, তাহার সবই প্রায় পারি। সপ্তাহান্তে পরীক্কা লয়। ১০০ তে ৯৯, ৯৮, ১০০ করিয়া লম্বর পাই। ষাঁঢ়ে নানান নাটক চুদিয়ে প্রথম দশজনকে গরুর মালা গলায় ঝুলাইয়া দেয়। আমরা সেই মালা গলায় টাঙ্গাইয়া টাঙ্গাইল শহর চষিয়া বেড়াই প্রচুর আমোদ নিয়া। রাস্তার ভুদাই লুকেরা নানা কতা জিগাস করিয়া বসে, এইডা কীয়ের মালা, ক্যারা দিছে, কীয়ের নিগ্যা দিছে এইসব নানান ধুনফুন। আমরা খুব আগ্রহ আর উত্তেজনা নিয়া তাগোরে সুমস্ত বিত্তান্ত জানাই। ভুদাই লুকেরা চোখ বড় বড় করিয়া শুনিয়া লয়।
পরের সাপ্তায়ই দেহা যায়, ওই ভুদাই লুকদিগই হয়তো তাহার ভাই, ভাইস্তা অথবা বইনের পুলারে লইয়া ষাঁঢ়ের বাইত্তে আইয়া হাজির। ষাঢ়! আমার ভাইগনাডারে এট্টু পড়ান না ষাঁঢ়! ওরে আমার বইনে আর দুলাভাই আমরি ওফিসার বানিবার চায়। আফনে ওরে এট্টু ঘইষা মাইজা আমরি ওফিসার বানিয়া দ্যান না ষাঁঢ়!
শহীদে মিচি মিচি হাসে আর কয়, ওরে দেইহা তো নরোম সরোম মুনে হয়। উ কি আমরি অইবার পারব? অনেক কষ্টর জীবন এই ক্যাঢেট কলেজ। আর সুনাবাহিনীর জীবন তো আরও কষ্টর। কত পুলাহান কুলিবার না পাইরা ট্রেনিঙ্গের সুমায়ই আত পাও ভাইঙ্গা সারা জীবনের নিগ্যা পঙ্গু অইয়া যায়গা। মইরা যাওয়াও ব্যাফার না...বলিয়া পাশের সহকারী বুলবুল ষাঁঢ়ের পানে ঘুলা চোকে তাকায়। বুলবুল ষাঁঢ় আরো এক পাও আইগিয়া কয়, ক্যা আড়বছর দিঘিল্যার তুফাজ্জলের ভাই পিঙ্কুই তো ট্রেনিঙ্গের সুম মইরা কুইয়া ধইরা গেলগা... বলিয়া মিচি মিচি হাসে।
কিন্তু ষাঁঢ়গোরে থাফা দিয়া থামিয়া দেয় ভুদাই মামা, আর কেউ যুদি ট্রেলিং সাকসেসফুল্লি পাশ করা হারে তাইলে? এইবার ভাইগনারে থাফা দিয়া থামায় বুলবুল ষাঁঢ়ে, তাইলে তো কতাই নাই। সুজা রাজা....... তুমার ভাইগনায় রাজা অইয়া যাইবগা...বাইত্তে যাইয়া জিলাফা বিলাওগা বলিয়া খ্যাক খ্যাক হাইসা বুলবুল ষাঁঢ় তার ওয়েট কমিয়া হালায়।
ফলে মামার মতো ভুদাই লুকও আর বুলবুল ষাঁঢ়রে পাত্তা দেয় না। বরং চোখ ঘুরিয়া শহীদ ষাঁড়ের মুহী তাকাইয়া কয়, আফনের কুনো কতাই শুনুম না ষাঁঢ়। ভাইগন্যারে আমরি ওফিসার বানানই নাগব। যত ট্যাকা নাগে নাগুক..হ্যার বাপ মায়ের খুপ শক, হ্যার পুলায় ম্যাজর অবো।
ট্যাকার ভাছ পাইয়া ষাঁঢ় এট্টু যুৎ থাকিয়া পুরা কতা শুনিয়া লয়। অপেক্ষা করে ভুদাই মামার প্যাটের চিফিতে আরও কতা লুক্কায়িত আছে কি-না। যহন জানা যায়, মামা আর কুনো কথা কহিবে না, তাহারও মিনিটখানি পর ষাঁঢ় কথা বলিয়া উঠে, তা তুমার ভাইগন্যা ছাত্র কেমুন?
মামা প্রশ্নের অর্ধেক শুনিয়াই বলিয়া ফালায়, তুখ্খার ছাত্র, খুপ ট্যানেল। পড়া নিয়া আফনের কুনো চিন্তাই করন নাগব না। খালি একবার দেহিয়া দিবেন, আমার ভাইগনায় হুবাহুব কইয়া দিব তুতাপাখির নগাল।
কিন্তু ষাঁঢ়ে এইবার মামারে গুতা দিয়া বহে, হ। এইন্না ব্যাকেই কয়। পরে দেহা যায় ঢ্যাব্বত মার্কা ছাত্র।
কিন্তু মামা হটে না। কয়, অন্য পুলাহানের কতা কইয়া হারুম না। কিন্তু আমার এই ভাইগনারে ছুটবেলা থিক্যাই দেইকা আইতাছি, কুন্তা না পইড়াই খালি ফাস্ট অয়। আমার তো মুনে হয়, হে যুদি খালি হ্যার অর্ধেক বেরেন খরচ করা হারে, তাইলে জজ বেরিস্টার অওয়া কুনো সাবজেটই না।
এইবার মামারে আর ঘাটাইবার কুনো কারণ খুঁজিয়া পায় না ষাঁঢ়ে। তাই পড়াশুনা বিষয়ক ধুনফুন প্রশ্ন করিয়া এবং প্রচুর নিমরাজি হইয়া ভাইগন্যাডারে ভর্তি করিয়া লয় ষাঁঢ়েরা, পাঁচশ ট্যাকা এডভাজ নিয়া।
সে যাই হোইক না ক্যা, আমরা আমাদিগের ন্যায় চলিতে ফিরিতে পড়িতে নাগিছিলাম। কিন্তু সমেস্যা দেখা দিল মুনালিজা চৌধুরানী নাম্নী এক ড্যানাকাটা পরী ঢাকা হইতে শহীদের দুহানে উড়িয়া আহায়। খবর পাইলাম, উহা এ’ ব্যাচের সকলরেই তার প্রেমের চৌবাচ্চায় ফালাইয়া হামুডুমু খিলাইতাছে। যাহার সুরভিত গরম জলের ছিটা আমাগো বি ব্যাচের জুনিয়ারগো মইদ্যেও কাহারো কাহারো গতরে আসিয়া নাগিতে নাগিল।
(আরো চলবো নিকি?)
শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১০
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)