মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০১০

সুভদ্র বাঘ এবং বেলেহাজ বিড়াল(শেষাংশ)

বিড়াল বাহিরে যাইবামাত্র পাটিতে ন্যাটা দিয়া বসিয়া বাঘ ফের বাল কাটিতে লাগিল। কর্ম মনমতো হওয়ার আনন্দে বাঘ গানও গাহিতে লাগিল প্যারালালি, হাসি হাসি পড়বেন ফাঁসি
দেহন চুদাইবেন ভারতবাসী ...
একবার বিদ্যায় দেন মা
ঘুইরা মুইরা আহি...
বিরাট লাটকে মারবেন বলিয়ে
মারলেন ইংলন্ডনবাসী
একবার বিদ্যায় দেন মা
ঘুইরা মুইরা আহিরে...'
এদিকে বেলেহাজ বিড়াল বারিন্দায় আসিয়া ফাঁসিয়া গেল। বারিন্দার মাটিতে কোথাও পাটি পাতা না থাকায় বেলেহাজ বিড়াল ভুদাই হইয়্যা গেলগা।এহন সে কনে বহে?এট্টা ফিঁড়া থাকলেও চলতো। টুল বেঞ্চি নাইলে নাই থাইক। কিন্তু হারাম বলতে.. সুভদ্র বাঘের বাড়ির বারিন্দায় এইসব কুনো ধুনও আছিল না। ফলে বেলেহাজ বিড়াল বুদ্ধি খাটিয়া মাটিতে গুয়া না ঠেকিয়া দুই ঠ্যাঙ্গের উপরে ভর দিয়া বসিয়া রইল। হগ্নিপাতের স্টাইলে। কিন্তু কতক্ষণ? বেলেহাজ বিড়ালের আবার উপরের বডি বড় এবং ওজনদার থাকায় তার নীচের দুই ঠ্যাং বেশিক্ষণ ভার বহন করিতে স্বীকার গেল না।
দুই মিনিট বইতে না বইতেই দুই ঠ্যাঙ্গই কুহান ধরল, আর পারতাছিনা গো..এইবার ক্ষ্যামা দেন.. এইবার আফনে আফনের পুটকি দোফে নামান। কিন্তু বেলেহাজ বিড়াল তা নামায় না সহসা। কারণ বউ কাইলক্যাই বাঘের বাইত্তে আইবার কতা শুইন্যা সবচেয়ে ভালো পুশাকটা সাবান দিয়া ঘইষা ঘইষা ধুইয়া দিছে। তাহাদে শুকানের পর সুন্দর কইরা ভাজ দিয়্যা বালিশের তলায় রাকছিল হারা রাইত। তাহাতে বাটির মইদ্যে গরম কয়লা দিয়্যা ডইল্যা ডইল্যা কইয়্যা দিছে,আইড়াকাইড়া কিছু খাইবান ন্যা য্যান। যেনে হেনে বইবান না কইলাম। এই সাট আগামী সাত দিন পড়ন নাগবো কিন্তুক।
তাই বিড়াল গুয়া দোফে নামায় না। অথচ দুই ঠ্যাঙ্গের কুহানি অস্তে অস্তে বাড়তেই থাহে। ঠ্যাঙ্গে ঝিঞ্জি ধরে পয়লা, তাহাদে জিলকায়। ক্ষেনে ক্ষেনে চিলিকও মারে। কিন্তু বিড়াল গুহা দোফে নামায় না। বরং পাত্তা না দিয়া ভাবতে থাকে অন্য কথা। আর তখনই তার চোখের সামনে ভাইস্যা ওঠে বাল কাটতে থাকা সুভদ্র বাঘের বিরাট বড় ডাস ক্যাপিটাডা। বিড়াল মনে মনেই অবাক হয়..ওরে বাপরে বাপ! শালায় ঘগ্গ গুইনা না যানি কেমুন কইরা মারে! বাঘিনী নিশ্চয়ই আরামে সারা দিন কতা কইতে হারে না।
কিন্তু বিড়াল বেশিক্ষণ ভাবতে পারে না। একদল বিলাতী ইঁন্দুর তার তন্ময়তা ভাইঙ্গা খানচুর কইরা দেয়। বিলাতী ইঁন্দুর জর্মেরপর অবধি কুনো বিড়াল দেহে নাই, সঙ্গতকারণেই তাদের কুনো ধারণাই নাই বিড়াল কি জিনিস। তাই তারা বিড়ালকে তাদের আদরের খেলনা মনে করিয়া আনন্দে খেলতে থাহে।
পক্ষান্তরে আশেপাশে দেশি ইন্দুরের চেহারা দেখলেই যেইখানে বিড়ালের আমোদ আর ধরে না, সেইখানে নিজ গতরের উফর বিলাতী ইন্ধুরের নাচানাচি দেখিয়া তার মাথাখারাপ হইয়া যায়্। মুহূর্তের মইদ্যে থাফা দিয়া চাইর পাঁচটা ধইরা হালায়। আর তহনই তার চোকের সামনে ভাইসা ওঠে বাঘের বিরাট বড় ডাস ক্যাপিটা। তাই ধইরাই আবর আদর কইরা বিলাতী ইন্দুরগুনিরে দোফে নামিয়া থোয়। কিন্তু বিলাতী ইঁন্দুর তো আর এত কিছু জানে না। তাই তারে দোফে নামিয়া থুইলেই কি আর সে দোফে থাকে? থাকে না। বরং নতুন উদ্যম আর উত্তেজনা নিয়া নতুন পাওনা খেলনার নগে খেলায় মাতিয়া ওঠে যারপরনাই।
বিড়াল প্রথমে হেইশ...হৈৎ হৈৎ ধেইশ ধুৎ ধুৎ বলিয়া গায়ে চড়িয়া বসা বিলাতী ইন্দুরগুলোকে দমনের চেষ্টা নেয়। কিন্তু বিড়ালের কোনও চেষ্টায় কামে আসিল না। বরং বিলাতী ইঁন্দুর দল ব্যাপক জোশে ঝাপিয়া পড়ল বেলেহাজ বিড়ালের উপর। কেউ চড়িল বিড়াল মাথায়, কেউ কানে কেউ বিড়ালের ছুট্ট পক্কুতে পর্যন্ত কামুড় গছাইয়া দিল। তখন আর বিড়াল সহ্য করিতে পারিল না। এমনিতেই বাঘের বিরাট বড় ডাস ক্যাপিটা দেইখ্য ব্যাপক শরমিন্দা হওয়া বিড়ালের লেস ক্যাপিটা পক্কু যহন আক্রান্ত হৈল তহন আর ধৈর্য ধরিয়া বইস্যা থাহার মাল না বিড়াল। তাই সে লেস ক্যাপিটার মুণ্ডি আর হুলের পুতা কামড়িয়া ধরা বিলাতী ইন্দুর দুইডার নেজ ধইরা এমুন আছাড় মারল, যে আছাড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে গুয়া দিয়া ফুছ কইরা দম বাইরিয়া গেল ইন্দুঁর দুইডার। এই দেখিয়া অন্য বিলাতী ইন্দুরগুনি ব্যাপক ভয়ে পিচু হটে গেল। আর তহনই বিড়ালের চোকে ভাসিয়া উঠিল বাঘের ডাস ক্যাপিটাডা। উপায় অন্তর না দেখিয়া বিড়াল বারিন্দার মাটিতেই গর্ত খুঁড়িয়া মৃত ইন্দুরগুনিকে মাটি চাপা দিয়া থাপথুপ দিতে লাগিল। আর তখনই বিড়াল টের পাইল তার পেছন হাজির হয়েছে সত্যিকারের বিরাট ডাস ক্যাপিটা।
বিড়াল ঘুরিয়া বলিল, স্যার কহন আইসলাইন?
বাঘ বলিল, তুমি যখন আমার বিলাতী ইঁন্দুরগুনিকে মারিয়া গাড়িয়া ফেলিবার উপক্রম করিতেছিলে, তখনই আসিয়াছি।
হতভম্ব বিড়াল বলিল, স্যার এইডা কী কইলান?
বাঘ বলিল, কেন, যাহা সত্য তাহাই বলিলাম।
এইবার বিড়াল বলে, স্যার আমনে না এট্টু আগেই আমারে কইলান অপ্রিয় সত্য বলতে নাই।
সেইডা তো তর ক্ষেত্রে হারামজাদা, বইলা বাঘ মিচকি মিচকি হাসে। কিন্তু কেউ এট্টু ভালো কইরা খিয়াল করলেই দেখতে পাইত তার দাঁত আসলে হাসতাছে না। সুফ্ফ কিড়মিড়ানি দিতাছে।
বিড়াল আরও অবাক হয়, স্যার এইডা কি কইলান? এক বাজারে কি কুনোদিন দুই ভাউ হইতারে?
বাঘ কয়, তরে ক্যারা কইল তর আর আমার বাজার এক?
বিড়াল কয়, তাইলে স্যার আফনে কইবার চাইতাছেন এক বাজার না?
কইবার চাইতাছি না..কইতাছি, বইলা বাঘ দাঁত কিড়মিড়ানি বাড়িয়া দেয়।
বিড়াল থুম ধইরা থাহে। কী যানি ভাবার চেষ্টা করবার যায়।
কিন্তু তার আগেই বাঘ তারে জিগায়, আইসক্যা তুই কী দিয়া ভাত খাইছত?
বিড়াল এইবার খুব সপ্রতিভ হয়, নিজের বিষয় পাইয়া। কয়, ক্যা ভালো কইরা পিয়াজ কাছামইচ মাইরা দুই পেলেট পান্তা ভাত খাইয়া আইসি।
-আর আমি কী দিয়া খাইছি জানোস? বাঘ কয়।
বিড়াল কয়, না স্যার.. জানি না। কী দিয়া?
বাঘ কয়, বাইত্তে পচুর ফল ফ্রুট গড়াগড়ি পাড়তাছে...ভাত পুলাউ মুরগী গরু শুয়ার কোনডার মাংসরই অভাব নাই...ক্ষির সেমাই অমুক তমুক কুনডার কতা কমু তরে..শেষমেশ এইন্যা কুনোডা না ধইরা একটা বাডগাডে কামুড় দিয়া থু কইরা ফালিয়া দিছি-এইডাই হৈল আমার আইজ সকালের নাস্তা।
বিড়াল আবারও অবাক হয়। কয়, তাই নিহি। তা বাডগাডটা কনে ফালাইছেন?
বাঘ চতুর চোকে বিড়ালরে দেহে। এইবার সত্যিই মিচকি মিচকি হাসে আর কয়, ক্যা? তা দিয়া তুই কী করবি?
-না, মানে কুনদিন খাই নাই তো? তাই?
বাঘ কয়, ধূর ব্যাটা এহনও ওই জিনিস থাকে। কুত্তায় খাইয়া ফালাইছে কবে।
বিড়াল কয়, তাইলে স্যার..আফনের বাসা থিক্যাই একটা দেন।
বাঘ কয়, ধুশ ব্যাটা.তুই কতাই বুজস না। সারাজীবন ধইরা কচু ঘেচু খাইয়া তর অভ্যাস..হঠাশ কইরা বাডগাড খাইলে তর প্যাট কাটপো না?
বিড়াল কয়, কাটুক। একদিন প্যাট কাটলে কিছু অইব না।
বাঘ কয়, এই জুইন্যেই তরে কইছিলাম। তর বাজার আর আমার বাজার এক না। তা তুই আমারে এহন ক, এই যে আমার বিলাতী ইঁন্দুর দুইডা তুই মারলি..যার একটা কিনতেই আমার খরচ হইছে সাড়ে পাচশো ট্যাহা..এই এগারোশো ট্যাহা তুই আইজক্যা কন থিক্যা দিবি?
বিড়াল ভুদাই হয়, মানে? স্যার আফনে এইন্না কী কন। একটা ভুল হইয়া গেছেগা..তাই বইলা আফনের মতো এট্টা মান্নিগুন্নি নোক আমার কাছে জরিপানা চাইব..এইডা আমি ভাবতেই পারি না।
বাঘ কয়, তরে তো কিছু ভাববার কই নাই? ট্যাহা ফালিবার কইছি। বাইনচোদের বাচ্চা.. বাডগাড চুদাও..ট্যাহা ফালা। বইলা বাঘ ধমক কষায়।
বিড়াল সত্যি সত্যিই ভাবতে পারে নাই সুভদ্র বাঘের আচরণ এই রকম হইতে পারে কোনও কালে। তাই সে চমকায়। তার চোখ ছল ছল হয়। যে একশ' ট্যাকা তার পকটের তলে প্ইড়া আছিল অন্ধকারে, তারে আলোয় টাইন্যা আইন্যা কয়, আসলেও আফনের বাজার আর আমাগো বাজার এক না। এই নেন।
বাঘ একশ' ট্যাকা পাইয়া মুনে মুনে খুব খুশি হয়। কারণ এই একশ' ট্যাকা দিয়াই সে সব কয়ডা ইঁন্দুরের বাচ্চা ঢাকা শহর থিক্যা কিন্যা আনছিল। কিন্তু মুখে কয়, এই একশ' ট্যাহা দিয়া কী হইব? আর এক আজার ট্যাকা কো?
বিড়াল কয়, স্যার আমার কাছে আর নাই। বইলা কান্দে।
বাঘ এইবার এট্টু নরম হয়। কয়, ঠিকাছে পরের বার পুরা ট্যাকা নিয়া আইবি। মুনে থাকপো?
বিড়াল কয়, থাকপো স্যার।
বাঘ কয়, চল তাইলে ভিতরে যাইয়া বসি। আমরা আইজক্যা পড়ুম..উন্নত নৈতিকতার পাঠ।
বিড়াল কয়, না..স্যার। আমি আইজক্যা আর কিছু পড়ুম না। বাইত্তে যামু গা।
বাঘ কয়, ক্যা..? এহনই যাবি ক্যা? আমি কত খাটাখাটনি কইরা সব যোগাড়যন্তর কইরা রাকছি। আর তুই কস এহন যাবিগা..ক্যা?
বিড়াল কয়, শইলডা ভাল্লাগতাছে না।
বাঘ কয়, ঠিকাছে যাগা।
বিড়াল রিক্ত নিঃস্বের মতো চইলা যাইতে থাহে। বাঘ পিছন থিক্যা ডাকে..এই এই শোন শোন..বিড়াল অনিচ্ছা সত্ত্বেও পেছন ফিরে। বাঘ কয়, বাডগাড নিয়া যাবি না?
বিড়াল কয়, না।

0 মতামত(সমূহ):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন